মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে, হারা শশীর হারা হাসি, অন্ধকারেই ফিরে আসে।

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি (নতুন সংস্করণ) - ভাব-সম্প্রসারণ | | NCTB BOOK
28

মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে, হারা শশীর হারা হাসি, অন্ধকারেই ফিরে আসে।

ভাব-সম্প্রসারণ: মানুষের জীবনে সুখ বা দুঃখ চিরস্থায়ী নয়। সুখের পরে দুঃখ আসে, আবার দুঃখের পরে সুখ আসে। এজন্য সুখে যেমন অতিরিক্ত আত্মহারা হতে নেই, তেমনি বিপদেও ধৈর্যহারা হওয়া ঠিক নয়।

আকাশ যখন মেঘে আচ্ছন্ন হয়, সূর্য বা চাঁদের আলো তখন ঠিকমতো পৃথিবীতে পৌছায় না। ফলে দিনের বেলায় সূর্য দেখা যায় না, রাতের বেলায় চাঁদ দেখা যায় না। কিন্তু এমন ঘটনা খুবই সাময়িক। দিনের অধিকাংশ সময়ে সূর্য দেখা যায়। একইভাবে মেঘও চাঁদকে বেশিক্ষণ আড়াল করে রাখতে পারে না। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের হাসি তাই সবারই দেখার সুযোগ হয়। অর্থাৎ পৃথিবীতে মেঘের আড়াল যেমন সত্য, মেঘহীন আকাশও সত্য। একইভাবে মানুষের জীবনেও কখনো কখনো দুঃখ-দুর্দশার কালো মেঘ হাজির হয়। মনে হয়, এই দুর্দশা যেন আর কাটবে না। দুর্বলচিত্তের মানুষ তখন দিশেহারা হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা ভুলে যায়, মানুষের জীবনে কোনো কিছুই নিরবচ্ছিন্ন নয়। জীবন-আকাশের এই কালো মেঘও বাস্তব মেঘের মতো সাময়িক। এজন্য বিপদে ভেঙে না পড়ে দৃঢ়তার সঙ্গে তা মোকাবিলা করতে হয়।

মানুষের জীবনে কোনো দুঃসময়ই চিরস্থায়ী বা অনিবার্য নয়। ধৈর্য ধরে দুঃসময়কে অতিক্রম করতে পারলেই সুখ-সূর্য বা সুখ-চাঁদের দেখা মেলে। জীবন তখন পুনরায় সুন্দর ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে।

Content added By
Promotion